জীবজন্তু আল্লাহর অন্যতম একটি সৃষ্টি। তাদেরকে আল্লাহ তাআলা মানবজাতির বিভিন্ন কল্যাণে সৃষ্টি করেছেন। তাদের থেকে উপকৃত হতে হলে তাঁর বিধান অনুযায়ী উকার লাভ করতে হবে। কিন্তু মানবজাতি অনেক সময় নিজেদের খেয়াল খুশি পূরণের জন্য এমন কাজ করে, যা আল্লাহর বিধান লঙ্ঘিত হয়। তারা জীবজন্তুর বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কেটে তাদেরকে কষ্ট দেয়। ইসলাম জীবজন্তুর প্রতি এরূপ আচরণ হারাম করেছেন। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, (শয়তান বলে) তাদেরকে পথভ্রষ্ট করব, তাদেরকে আশ্বাস দেব; তাদেরকে পশুর কর্ণ ছেদন করতে বলব এবং তাদেরকে আল্লাহর সৃষ্ট আকৃতি পরিবর্তন করতে আদেশ দেব। যে কেউ আল্লাহকে ছেড়ে শয়তানকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করে, সে প্রকাশ্য ক্ষতিতে পতিত হয়। “আল-কুরআন, আন নিসা:১১৯।”
“ওমাই ইয়াত্তা খিজিস সাইত্বান” এর ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, শয়তানকে যে অভিভাবক হিসেবে গ্রহণ করে, (জীবজন্তুর অঙ্গচ্ছেদ করে) সে প্রত্যক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তার আনুগত্য ও আল্লাহর আনুগত্য কখনই সম্মিলিত হতে পারে না। শিরক মিশ্রিত ইবাদত কস্মিনকালেও আল্লাহর ইবাদত হিসেবে গণ্য হবার নয়। “ফাক্বাদ খাছিরা খুছরা নামমুবিনা” অর্থাৎ শিরক এর কারণে তারা তাদের আসল সম্পদ ঈমান হারিয়ে ফেলবে এবং জান্নাতের বদলে প্রবিষ্ট হবে জাহান্নামে। “কাজী মুহাম্মদ সানাউল্লাহ পাানিপথী, তাফসীরে মাজহারী, খ.৩, পৃ:১৮১।”
এ প্রসঙ্গে হাদীসে এসেছে, আবূ সা‘ঈদ আল-খুদরী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সা. পশুর অঙ্গ-প্রতঙ্গ কর্তন করতে নিষেধ করেছেন। “ইমাম ইবনু মাজাহ, আস-সুনান, তাহকীক: মুহাম্মদ ফুয়াদ আব্দুল বাকী, অধ্যায়: আয যাবাইহ, পরিচ্ছেদ: আন নাহী সাবরিল আল বাহাইমু ওয়া আনি আল মিছলাতি, প্রাগুক্ত, খ.২, পৃ:১০৬৩, হাদীস নং-৩১৮৫।”
এ প্রসঙ্গ তিনি আরো বলেন, উতবা ইবন আবদ আস-সুলামী রা. হতে বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহ সা.কে বলতে শুনেছেন, তোমরা ঘোড়ার কপালের পশম কাটবে না, ঘোড়ার পশম কাটবে না এবং লেজের পশমও না। কারণ, এর লেজ হল মশা-মাছি বিতাড়নের হাতিয়ার, আর ঘাড়ের পশম শীতের কাপড় এবং কপালের পশম সৌভাগ্যের প্রতীক। “ইমাম আবূ দাউদ, আস-সুনান, অধ্যায়: জিহাদ, পরিচ্ছেদ: ফি কারাহাতি জায্যা নাওয়াছি আল খায়লি আয নাবিহা, প্রাগুক্ত, খ.২, পৃ:৩২৭, হাদীস নং-২৫৪৪।”
এ প্রসঙ্গে হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, আদী ইবনে ছাবিত রা. কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আব্দুল্লাহ ইবনে ইয়াযিদ হতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, নবী করীম সা. লুটরাজ ও পশুর অঙ্গহানি ঘটাতে নিষেধ করেছেন। “ইমাম বুখারী, আস-সহীহ, অধ্যায়: যাবায়িহা ওয়াছছাইদি ওয়াততাসয়িাহ, পরিচ্ছেদ: মা য়াকরাহু মিনা আল মিছলাতি ওয়া আল মাছবুরাতি ওয়া আলমজাছ্ছামাতি, প্রাগুক্ত, খ.৫, পৃ:২১০০, হাদীস নং-৫১৯৭।”